“ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও দলিতদের সুরক্ষায় প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগ” – গত ০৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় “সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিক নীতি-কাঠামোর দাবি” শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এমন মতামত ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বিশিষ্টজনেরা। দৈনিক সমকাল কার্যালয়ে হেকস/ইপার-এর উদ্যোগে ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেড-এর সহায়তায় আয়োজিত এ বৈঠকে বক্তাগণ সমতলের আদিবাসী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসমূহ এবং পেশা ও বর্ণের ভিত্তিতে বিভাজিত দলিতদের চরম দারিদ্র্য এবং আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেন। তারা বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ হলেও এই জনগোষ্ঠী শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য মৌলিক ও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। এছাড়া ক্রমাগত ভূমি দখলের মাধ্যমে তাদের ভূমিহীন জনগোষ্ঠীতে পরিণত করা হচ্ছে। এসময় তারা সমতলের আদিবাসী ও দলিতদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন ও বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়নের জোরদার দাবি জানান।
বৈঠকে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকারকর্মী, গবেষক, দলিত ও সমতলের আদিবাসী প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক উত্থাপিত সকল দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বলেন, বৈষম্য বিলোপ আইনটি প্রক্রিয়াধীন। পরবর্তী সংসদের প্রথম অধিবেশনেই আইনটি পাশ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া, সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের যেন তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ না করা হয়, সে বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা দেওয়া হবে।
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল সমতলের আদিবাসী ও দলিতদের অধিকারের বিষয়গুলো ভীষণভাবে অবহেলিত উল্লেখ করে বলেন, এসব সমস্যার সমাধান করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে না।
আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা সমতলের আদিবাসীদের ভূমি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর জোর আরোপ করেন।
হেকস/ইপার-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনিক আসাদ সমতলের আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর পরিচয় এবং অধিকার সুরক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিক নীতি-কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এই আলোচনার মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গবেষক ফিলিপ গাইন।
এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ বোরহান কবীর, বাংলাদেশ আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, ইএসডিও-র নির্বাহী পরিচালক ড. শহিদুজ্জামান, কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা, অ্যাডভোকেট মনি লাল দাস, ঘোড়াঘাট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রুশিনা সরেন, হেকস কর্মসূচী সমন্বয়ক মুজাহিদুল ইসলাম, অভিযান-এর সাধারণ সম্পাদক বনানী বিশ্বাস, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র দাস, এনএনএমসি সমন্বয়ক নুরন্নবী শান্ত প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, হেকস/ইপার সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষায় ‘পিদিম’ কার্যক্রম পরিচালনা করছে যার মূল লক্ষ্য উক্ত জনগোষ্ঠীসমূহের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক নীতি-কাঠামো প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা।
সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধনে দলিতদের সামাজিক সুরক্ষায় কতখানি সমাজ সেবা বা অনান্য দপ্তর ভুমিকা রাখছে সে বিষয় টি গুরুত্বের সংগে দেখতে হবে নচেৎ সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় যিনাদের প্রাপ্যতা রয়েছে তারা সেই অধিকার হতে বন্চিত হচ্ছে।
এরা পিছিয়ে থাকছে, জনপ্রতিনিধি রা এসবগোষ্ঠির জন্য এগিয়ে আসছে না ফলে এসডিজি অর্জনে বাধা হয়ে দাড়াবে বলে মনে করি।
উল্লেখ্য এদেরকে নিয়ে যিনারা কাজ করছেন তাদের ইনভলমেন্ট ছাড়া সুরক্ষায় সুযোগ পাবে না এসব জনগোষ্ঠী।