গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট
জয়াগ, সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী।

নোয়াখালীতে-গান্ধী-আশ্রম-ট্রাস্টের-উদ্যোগে-আন্তর্জাতিক-মানবাধিকার-দিবস-উদযাপন1গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের আয়োজনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলাধীন জয়াগস্থ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে সর্বস্তরের শতাধিক কর্মী ও অতিথির অংশগ্রহণে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে নানা কর্মসূচী পালন হয়েছে। প্রথম পর্বে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শংকর বিকাশ পাল এর নেতৃত্বে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় গান্ধী কর্মী ও অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে সর্ব ধর্মীয় প্রার্থনা শেষে সমাজ সেবক আ.ন.ম জাহের উদ্দিন, প্রান সংস্থার প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদ সম্মিলিতভাবে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন ও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। সর্বস্তরের কর্মী ও অতিথির অংশগ্রহণে গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গন থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী শুরু হয়ে জয়াগের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে।

দ্বিতীয় পর্বে “অন্যের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হোউন আজি ” প্রতিপাদ্যের আলোকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শংকর বিকাশ পাল এর সভাপতিত্বে এবং মনিটরিং অফিসার মোঃ আজগর আলীর সঞ্চালনায় বেগম রোকেয়ার জীবনী ভিত্তিক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী হিসেবে নোয়াখালী জেলা ও সোনাইমুড়ী উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা সম্মানে ভূষিত গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের আইসিটি ম্যানেজার রুমা আক্তার আত্মকথা উপস্থাপন করেন । আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিস কো-অর্ডিনেটর অসীম কুমার বক্সী, উপজেলা ম্যানেজার ও মানবাধিকার কর্মী ফৌজিয়া নাজনীন, মোঃ শফিকুল ইসলাম, গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট এর প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র রায় প্রমুখ। বক্তারা বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষ করে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, গান্ধীজির অহিংসা, শান্তি ও সম্প্রীতির রাজনৈতিক দর্শন এবং শিক্ষার প্রসারে বেগম রোকেয়ার জীবনাদর্শ জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-ভৌগলিক সীমারেখা-শ্রেণী পেশা-দলমত-নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বকালে সর্বত্র প্রাসঙ্গিক এবং বর্তমান সময়েও পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তা অনুসরন করা খুব জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেগম রোকেয়ার জীবনাদর্শ ভিত্তিক মুক্ত আলোচনায় গান্ধী মেমোরিয়াল ইন্সটিটিউটের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী কুলসুম আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস রীপা, মোঃ হাসান, সুমনা রানী দাস এবং পপি রানী বর্মন শিক্ষাক্ষেত্রে পিতামাতার অবদান, জীবনসংগ্রাম এবং নিজেদের আত্ম সফলতা তুলে ধরেন। তারা বলেন “নারী হিসেবে নয়; বরং একজন মানুষ হিসেবে অসম্মান, হিংসা হানাহানি চাই না; চাই সৌভ্রাতৃত্ব এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান’’। “শিক্ষিত হয়ে পুরুষের সঙ্গে বিরোধিতা নয়; সহযোগী হয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশ ও দশের সেবা করতে চাই।” দ্বিতীয় পর্বে পরিশেষে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের থিয়েটার ইউনিট কর্তৃক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং সকলের অংশগ্রহণে রামধূন পরিবেশন করার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।