ছবি সংগৃহীত

‘আজকের শিশু, আগামীর ভবিষ্যৎ’ এই কথাটি কি সব শিশুদের বেলায় খাটে? আমাদের সমাজে ছিন্নমূল শিশুরা সমাজের প্রতিটি স্তরে বৈষম্যের শিকার হয়। আর যেসব শিশুদের জন্ম সামাজিক স্বীকৃতি ও পিতৃপরিচয়হীন, তাদের জন্যে আরও হিংস্র ও কঠিন এ পৃথিবী।

বাংলা‌দেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম যৌনপল্লি হি‌সে‌বে খ্যাত রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপ‌জেলার দৌলতদিয়া যৌনপ‌ল্লি। ১৯৮৮ সালে গড়ে ওঠা দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে বসবাস প্রায় ৫ হাজার মানুষের। এর মাঝে যৌনকর্মীর সংখ্যা ১ হাজার ৩০০। এ ছাড়া পল্লির শিশুর সংখ্যা প্রায় ৬০০।

অপ্রত্যাশিতভাবেই এই যৌনপল্লিতে জন্ম নেয় শিশুরা। প্রকৃতির নিয়মেই ওদের একটু একটু করে বেড়ে ওঠা। যখন ওদের স্কুলে যাওয়ার বয়স, যৌনকর্মী মায়েরা শত বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ভর্তি করাতে যান স্কুলে। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে আটকে যায় স্কুলের খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করা, কারণ ওদের নেই কোনো পিতৃপরিচয়। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রায় সব জায়গাতেই নিজের নামের পাশাপাশি বাবা ও মায়ের নামের দরকার হয়। এক্ষেত্রে এই শিশুদের নির্দিষ্ট কোনো পিতৃপরিচয় না থাকায় তারা সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি আইনী জটিলতায় ভুগছে।

এখা‌নে শিশু-কিশোররা ছোটবেলা থে‌কেই মাদক ব্যবসা ও সেবনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া চুরি, ছিনতাই, নারীপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধের দিকেও পা বাড়াচ্ছে। প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী ও নারী পাচারকারীরা তাদের এসকল  ব্যবসায় ব্যবহার করছে। এছাড়া কিছু বুঝে উঠবার আগেই অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যৌনকর্মীর পেশায় জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকছে মেয়েশিশু ও কিশোরীদের।

যৌনপল্লির পরিবেশ একজন শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ কষ্টসাধ্য করে তোলে। এই শিশু-কিশোরদের সুষ্ঠ ও স্বাভাবিক বিকা‌শের জন্য প্রয়োজন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, এবং নৈতিক শিক্ষা, সঞ্চয়ের মত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ।

যৌনকর্মী মায়েরা অনেকেই পল্লির বাইরে শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ নিয়ে ভয় পান।  কারণ তাদের মাঝে সংশয় কাজ করে যে তাদের যেহেতু সমাজ ঘৃণার চোখে দেখে, ফলে সন্তানদেরও হয়তো সমাজের অন্য পেশায় ঠাঁই হবে না। তাই এই শিশুরা যেন পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং এই জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে পারে, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

বর্তমা‌নে কিছু বেসরকারি সংস্থা এসব বিষয় নি‌য়ে কাজ কর‌ছে । দৌলতদিয়া যৌনপল্লির যৌনকর্মী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করে পায়াকট বাংলাদেশ, মুক্তি মহিলা সমিতি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, কেকেএসসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের মধ্য দিয়ে গত ১৭০ বছরের ইতিহাস পেছনে ফেলেছে দেশের চা শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত চা শ্রমিক গোষ্ঠী দেশের অর্থনীতির বিরাট অংশ পূরণে বিশেষ অবদান রাখলেও তাদের অধিকাংশেরই জীবনমান নিম্নমুখী।


এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ‘যুবদের জন্য উন্নয়ন সাংবাদিকতা’ বিষয়ক একটি কর্মশালা গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে আয়োজন করা হয়। এই কর্মশালায় বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ থেকে ৩৭জন যুব সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালার বিষয়বস্তু ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদেরকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের অর্জন ও প্রতিবন্ধকতা অথবা উন্নয়ন নিয়ে যুবদের চাহিদা ও প্রত্যাশা সম্পর্কে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়।

এই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন জনাব কামরুল হাসান, স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক রাজবাড়ী কণ্ঠ।